ওহাবি শব্দটি বহু মানুষ ব্যবহার করে শেখ ইমাম মুহাম্মাদ ইবন আবদুল ওয়াহহাব ইবন সুলায়মান আত-তামিমি আল-হানবালি (রহিমাহুল্লাহ) এর দাওয়াতের প্রতি ইঙ্গিত করতে, এবং তারা তাকে ও তার অনুসারীদের ওহাবি বলে অভিহিত করে। কিন্তু যে কেউ শেখ মুহাম্মাদ ইবন আবদুল ওয়াহহাব (রহিমাহুল্লাহ) এর আন্দোলন ও দাওয়াত সম্পর্কে সামান্যতম খোঁজখবর নিলে জানবেন যে তিনি বিশুদ্ধ তাওহিদের দাওয়াত প্রচার করেছিলেন এবং সকল প্রকার শিরকের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে সতর্ক করেছিলেন, যেমন মৃত মানুষদের প্রতি আসক্তি, গাছপালা, পাথর ইত্যাদির পূজা। আকীদার ক্ষেত্রে, তিনি সালাফে সালেহিনের আকীদা অনুসরণ করতেন এবং ফিকহের শাখাগুলোতে তিনি ইমাম আহমদ ইবন হানবল আশ-শাইবানির (রহিমাহুল্লাহ) মাযহাব অনুসরণ করতেন, যা তার গ্রন্থসমূহ, ফতোয়া এবং তার অনুসারীদের বইসমূহ দ্বারা স্পষ্টভাবে বুঝা যায়়।
শায়েখ মুহাম্মাদ (রহিমাহুল্লাহ) এমন এক সময় দাওয়াতের কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন, যখন ইসলাম ব্যাপকভাবে বিলুপ্তির পথে ছিল, আরব উপদ্বীপসহ অন্যান্য অঞ্চল গভীর অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল এবং সেখানে বিভিন্ন উপাস্য ও মূর্তিপূজা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। শায়েখ নিরলসভাবে প্রচেষ্টা চালান, সংগ্রাম করেন এবং সব ধরনের ফিতনার পথ নির্মূল করতে সচেষ্ট হন, যাতে কুসংস্কারবিহীন বিশুদ্ধ তাওহিদের বার্তা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
এটি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার বড় অনুগ্রহ ছিল যে, সেই সময় দিরিয়ার আমির ইমাম মুহাম্মাদ বিন সউদ এই দাওয়াত গ্রহণ করেন এবং তিনি ও তার উত্তরসূরিরা এবং তার অনুগত জনগণ এই কল্যাণকর পথে এগিয়ে যান। আল্লাহ তাদের উত্তম প্রতিদান দিন, তাদের ক্ষমা করুন এবং তাদের বংশধরদের তাঁর পথে পরিচালিত করুন।
আজ পর্যন্ত আরব উপদ্বীপের অঞ্চলসমূহ এই কল্যাণকর দাওয়াতের ছায়ায় রয়েছে। তাঁর দাওয়াত কুরআন ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নাহর আলোকে পরিচালিত ছিল। ওহাবিবাদ কোনো নতুন মাযহাব নয়, যেমন কিছু অজ্ঞ ও বিদ্বেষপরায়ণ ব্যক্তি দাবি করেন। বরং এটি সালাফি আকীদার প্রতি আহ্বান এবং আরব উপদ্বীপে ইসলাম ও তাওহিদের যে নিদর্শনগুলো ভুলে যাওয়া হয়েছিল, তার পুনর্জাগরণ মাত্র।