ফাতওয়া আমানপুরী ২৫২ নঃ কিস্তি । শাইখ গুলাম মুস্তফা যহীর আমানপুরী (হাফিঃ)]
প্রশ্নঃ অযু ছাড়া আযান দেওয়া যাবে কি?
উত্তরঃ আযানের জন্য অযু শর্ত নয় । অযু ছাড়া আযান দেওয়া যাবে । কিন্তু উত্তম হচ্ছে অযু করে আযান দেওয়া । যখন কুরআনের মৌখিক তেলাওয়াত অযু ছাড়া করা যায় তো আযান তো অবশ্যই দেওয়া যাবে ।
কাতাদাহ বিন দী-আমাহ (রঃ) এর ব্যপ্যারে বর্ণিত আছে
তিনি (রঃ) অযু ছাড়া আযান দেওয়াতে কোন সমস্য মনে করতেন না (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ১/২১০ সানাদ সহীহ)
ইব্রাহীম নাখায়ী (রঃ) বলেন –
( ওযু ছাড়া আযান দেওয়াতে কোন সমস্যা নেই ) মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক ১/২১০ সনদ হাসান)
হাম্মাদ বিন আবি সুলায়মান (র:) সম্পর্কে বর্ণিত আছে
তিনি র: ওযু ছাড়া আজান দেওয়াতে কোন সমস্যা দেখতেন না । (মুসান্নাফ ইবনে আব্দুর রাজ্জাক ১/২১০ সনদ হাসান)
যে সমস্ত বর্ণনাতে মুয়াজ্জিন কে ওযু করে আজান দিতে বলা হয়েছে সেইগুলো যঈফ ও অপ্রমাণিত , নিম্মে বর্ননা গুলো পেশ করা হলো
১ – সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা:) বলেছেন :
ওযু ছাড়া কেউ যেন আজান না দেয় (সুনানে তিরমিযী ২০০,২০১) হাদীসটির সনদ যঈফ মারফু ও মওকুফ উভয় অবস্থায় যঈফ । যুহরি আন আন শব্ধে বর্ণনা করেছেন যুহরির আবু হুরায়রা (রা:) থেকে শ্রবন প্রমানিত নয়। এ ধরনের যে সমস্ত বণর্নায় যুহরি ও আবু হুরায়রা (রা:) এর মাঝখানে সাইদ বিন মুসায়্যিব (র:) ওয়াস্তা রয়েছে সেইগুলো ভুল, দুইজনের মধ্যে তার ওয়াস্তা ব্যতিত বণর্নায় সঠিক। যেমনটা ইমাম বায়হাকি (র:) বলেছেন। (সুনানুল কুবরা ১৯৫৮ ন: হাদিস এর আলোচনা) মুওয়ায়িয়া বিন ইয়াহয়া সাদাফফি একজন যইফ রাবী যেই বর্ণনায় মুয়াইয়ার মুতাবিয়াত করা হয়েছে তাও যইফ
আব্দুল্লাহ বিন ওয়াহহাব মিশরি মুদাল্লিস, তিনি শ্রবন উল্লেখ করনেনি ইউনুস বিন ইয়াযিদ যখন যুহরির পান্দুলিপি থেকে বর্ণনা করেন তখন তা গ্রহনযোগ্য, এই বিষয়ে কোন সমালোচনা নেই, এই বর্ণনাটি তিনি যুহরি করেছেন কিন্তু তার পান্দুলিপি থেকে নয়। এই বর্ণনা কে মুসলিম বিন ওয়ালিদ মারফু হিসেবে বর্ণনা করেছেন। আর ইউনুস বিন ইয়াযিদ মাওকুহ হিসেবে। এই বর্ণনাটি মাওকুফ হওয়াই সঠিক যেমনটা ইমাম তিরমীযী বলেছেন।
হাফিয নববী (র:) হাদিসটিকে যইফ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন (খুলাসাতুল আহকাম ৭৯৪) হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী (র:) বলেন ”
——–
২ – সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা:) বলেন :
সানাদ খুবই যইফ তথা দুর্বল
আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন হুসায়নের তাওছিক পাওয়া যায়না আব্দুল্লাহ বিন হারুন যইফ ও মুনকারুল হাদিস এই বর্ণনা একই সানাদে মাওকুফ হিসেবেও বর্ণিত ।
————–
৩ – সায়্যিদুনা ওয়ায়েল বিন হুজুর (রা:) থেকে বর্ণিত
রেওয়ায়েতটি বাতিল
উমাইর বিন ইমরান বাতিল রেওয়ায়েত বর্ননা করতেন । হারেস মাজহুল হাল তার অবস্থা জানা যায় না । আবদুল জব্বার বিন ওয়ায়েল, তার পিতা ওয়ায়িল বিন হুজুর (রাঃ) থেকে শ্রবণ করেননি হাফেজ নববী (র:) বলেন ” لم يدركه بااتقافهم” মুহাদ্দিসগন একমত যে আব্দুল জাব্বার তার বাবার যমানা পাননি। সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকিতে উমায়ের এর মুতাবেয়াত করেছেন সাদকা বিন উবাইদ মাজিনি করেছেন কিন্তু ওই সানাদটি মিথ্যা।
ওই সানাদে
আদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন সিনান বাসরি একজন হাদিস জালকারী সালমাহ বিন সিনান মুনকারুল হাদিস ——–
৪– সায়্যিদুনা আল-মুহাজির ইবনু কুনফুয (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা:) বলেছেন
إِنِّي كَرِهْتُ أَنْ أَذْكُرَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ إِلَّا عَلَى طُهْرٍ
আমি বিনা অযুতে আল্লাহর যিকির করা অপছন্দ করি (সুনানে আবু দাওদ ১৭, নাসাঈ ৩৮, ইবনে মাজাহ ৩৫০)
এর সানাদ যইফ
হাসান বাসরি আন আন শব্দে বর্ণনা করেছেন হুসাইন বিন মানজারের সাহাবী মুহাজির থেকে শ্রবন প্রমানিত নয়।
আতা বিন আবি রাবাহ (র:) সম্পর্কে বর্ণিত আছে:
إِنه كَرِهَ أَن يُؤَذِّنَ الرَّجُلُ وَهُوَ عَلَى غَيْرِ وُضُوءٍ . তিনি মুয়াজ্জিনের বিনা অযুতে আযান দেওয়া অপছন্দ করতেন (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ১/২১০ সানাদ হাসান)