আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিয়া আকিদার প্রসার

কারো কাজ, কথা গ্রহণ এবং অনুসরণের পূর্বে তার আক্বিদা সম্পর্কে ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরী। বাংলাদেশে এখন আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে ছাত্ররা তাদের নামের শেষে আজহারী উপাধি জুড়ে দেয় এবং মানুষ  সানন্দে তাদের গ্রহণ করে এটা ভেবে যে এত বড় যায়গায় পড়াশোনা করেছে অনেক বড় আলেম নিশ্চই। কিন্তু বাস্তবে তা না ও হতে পারে।

Posted by Shamil Basaiv on Friday, April 5, 2024

কারো কাজ, কথা গ্রহণ এবং অনুসরণের পূর্বে তার আক্বিদা সম্পর্কে ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরী। বাংলাদেশে এখন আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে ছাত্ররা তাদের নামের শেষে আজহারী উপাধি জুড়ে দেয় এবং মানুষ  সানন্দে তাদের গ্রহণ করে এটা ভেবে যে এত বড় যায়গায় পড়াশোনা করেছে অনেক বড় আলেম নিশ্চই। কিন্তু বাস্তবে তা না ও হতে পারে। এ প্রবন্ধ লেখার কিছুদিন আগে একজন বক্তা, শেষে আজহারী লাগানো, তার বিদায়াতপূর্ণ কিছু কথা শুনে অবাক হয়েছিলাম যে উনি সেখানে গিয়ে কি শিখলেন! এমন প্রসিদ্ধ যায়গায় পড়াশোনা করেও সুফি এবং শিয়া প্রভাবে পর্যবসিত হলেন কিভাবে? পরবর্তীতে জানতে পারি আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় শিয়াদের লালনপালন করে। 

মিশরীয় টিভি চ্যানেল আল-নীল এর সাথে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ(গ্রান্ড ইমাম), ডক্টর আহমদ আল-তৈয়্যেবের সাথে পরিচালিত একটি সাক্ষাৎকারের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। সাক্ষাতকারে ডঃ আল-তৈয়্যব শিয়া ইসলাম প্রসঙ্গে তাকফিরের ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন, ইসলামের অন্যান্য শাখার (মাযহাব) এর মত এটিকেও একটি শাখা বলে বৈধতা দিয়েছেন।  ডক্টর আল-তৈয়্যেবের এ সাহসী অবস্থান ওয়াহাবিজমের বিরোধিতায় দাঁড়িয়েছে, যারা শিয়া ইসলামকে নিষিদ্ধ করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা করেছে কারণ শিয়ারা তাদের(ওাহাবিদের) ধর্মগুরুদের (রাসূল স: এবং সাহাব) এর উপর আহলে বাইতের কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি দেয়।

প্রশ্নঃ আপনার মতে, শিয়া বিশ্বাসে কি কোন সমস্যা নেই?

উত্তর: কখনই নয়, ৫০ বছর আগে আল আজহারের তৎকালীন চ্যান্সেলর শেখ মাহমুদ শালতুত ফতোয়া জারি করেছিলেন যে শিয়া স্কুল হল পঞ্চম ইসলামিক মাজহাব এবং অন্যান্য মাজহাবের মতো।

প্রশ্নঃ আমাদের সন্তানরা শিয়া ইসলাম গ্রহণ করছে, আমাদের কি করা উচিত?

উত্তর: তাদের পরিবর্তন হতে দিন এবং শিয়া স্কুল গ্রহণ করুক। কেউ মালেকী বা হানাফী মাযহাব ত্যাগ করলে আমরা কি তার সমালোচনা করব? এই শিশুরা সবেমাত্র চতুর্থ স্কুল ছেড়ে পঞ্চমতে যোগ দিচ্ছে।

প্রশ্নঃ শিয়ারা আমাদের সাথে আত্মীয়তা করছে এবং তারা আমাদের সন্তানদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে? 

উত্তরঃ এতে দোষ কি, ধর্মের মধ্যে বিবাহ অনুমোদিত।

প্রশ্নঃ বলা হয় শিয়াদের আলাদা কুরআন আছে?

উত্তরঃ এগুলি বয়স্ক মহিলাদের আজগুবি গল্প ও কুসংস্কার। শিয়া কুরআনের সাথে আমাদের কুরআনের কোন পার্থক্য নেই, এমনকি তাদের কুরআনের লিপিও আমাদের বর্ণমালার মতো।

প্রশ্নঃ কোন দেশের (সৌদি আরব) ২৩ জন আলেম ফতোয়া দিয়েছেন যে শিয়ারা কাফের?

উত্তর: আল-আজহার ই হল মুসলমানদের জন্য ফতোয়া জারি করার একমাত্র প্রতিষ্ঠান।  তাই উপরোক্ত ফতোয়াটি অবৈধ ও অবিশ্বস্ত।

প্রশ্ন: আমার একটি খুব গুরুতর প্রশ্ন আছে যে “শিয়ারা আবু বকর (রা:) ও উমর (রাঃ) স্বীকার করে না, আপনি কীভাবে বলতে পারেন তারা মুসলমান?

উত্তর: হ্যাঁ, তারা তাদের গ্রহণ করে না। কিন্তু আবু বকর ও উমরের প্রতি বিশ্বাস কি ইসলামের মূলনীতির অংশ? আবু বকর ও উমরের কাহিনী ইতিহাসের অংশ এবং বিশ্বাসের মৌলিক বিষয়ের সাথে ইতিহাসের কোন সম্পর্ক নেই।

প্রশ্ন: (প্রতিবেদক অবাক হয়ে প্রশ্ন করেছেন) শিয়াদের একটি মৌলিক সমস্যা রয়েছে এবং তা হল "তারা বলে যে তাদের ইমাম  ১০০০ বছর পরেও বেঁচে আছেন"

উত্তরঃ  তিনি বেঁচে থাকতেও পারেন, কেন সম্ভব নয়? কিন্তু সুন্নি হিসেবে আমাদেরও তাদের মত বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই।

প্রশ্ন: (শিয়াদের নবম ইমাম মোহাম্মদ তাকি আল-জাওয়াদ -এর প্রতি ইঙ্গিত করে প্রতিবেদক প্রশ্ন করেছিলেন) শিয়ারা বিশ্বাস করে যে তাদের ইমামদের একজন মাত্র আট বছর বয়সে ইমাম হন; আট বছরের শিশু ইমাম হওয়া কি সম্ভব?

উত্তর : দোলনায় থাকা একটি শিশু যদি নবী (ঈসা আ.) হতে পারে, তাহলে আট বছরের শিশু কেন ইমাম হতে পারে না? এটা বিচিত্র কোনো বিষয় নয়। যদিও আমরা সুন্নি বলে এই আকিদা মেনে নিতে পারি না। যাইহোক, তাদের এই বিশ্বাস ইসলামের কোনো ক্ষতি করে না, এবং তারা মুসলমান।